কন্যা সন্তান দেখা হলো না বাস শ্রমিক শাহিনুরের - সাপ্তাহিক তুলসিগঙ্গা

Online Newspaper "The Weekly Tulsi Ganga"

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

কন্যা সন্তান দেখা হলো না বাস শ্রমিক শাহিনুরের

পাঁচ ভাই আর চার বোনের মধ্যে সবার ছোট বাস শ্রমিক শাহিনুর রহমান (৩২)। অনেক ছোট বেলা থেকেই শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত ছিল। স্ত্রী আর দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌর সদরের পশ্চিম বালিঘাটা মহল্লায়। ঢাকা কোচ এসআই ট্রাভেলস এ হেলপার হিসেবে কাজ করতেন। গত সোমবার রাতে বাড়ি থেকে এসআই ট্রাভেলস্ এ ঢাকা যান। বুধবার সকাল ৮টায় স্ত্রী মুর্শিদার সাথে মোবাইল ফোনে শেষ কথা হয় শাহিনুরের। বৃহস্পতিবার বাড়ি ফেরার কথা জানিয়ে ফোনে অন্তঃসত্তা স্ত্রী মুর্শিদাকে সাবধানে থাকতে বলেন শাহিনুর। এরপর বুধবার শাহিনুরের মৃত্যুর খবর আসে পরিবারের কাছে। তাঁর মৃত্যুর খবরে পরিবার তথা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। অসংখ্য নারী পুরুষ এখন ভিড় করছে তাঁর বাড়িতে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে শাহিনুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। স্ত্রী মুর্শিদা শোকে স্তব্ধ হয়ে আর কাঁদতেও পারছেন না। শুধু বিলাপ করছেন, শাহিনুরের স্মৃতি মনে করে। দুই ছেলের বাবা শাহিনুরের শখ ছিল কন্যা সন্তান নেওয়ার। অন্তঃসত্তা স্ত্রীর আলট্রাসনোগ্রাম করার পর সেই বিষয়টি ডাক্তার নিশ্চিত করেছে শাহিনুরকে। এ খবর জানার পর শাহিনুর ভীষণ খুশি ছিল। অনেক স্বপ্নও ছিল কন্যা সন্তানকে নিয়ে। স্ত্রী মুর্শিদা জানায়, অভাব অনটনের কারণে শাহিনুর পড়ালেখা করতে না পারলেও ওর ইচ্ছে ছিল সন্তানদের শিক্ষিত করার। তাইতো শতকষ্টের মাঝেও বড় সন্তানকে স্থানীয় বেসরকারি একটি ভাল বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিয়েছেন। এসএসসি পাশ করার পর ছেলেকে ভাল কলেজে পড়ানোরও ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু তাঁর সব শেষ হয়ে গেল।
মুর্শিদা জানায়, তাঁর স্বামী কোন রাজনীতির সাথে ছিলেন না। শুধু পেটের দায়ে বাসে হেলপারি করতো। আর সময় পেলেই বাড়ি ছুটে আসতো, তাঁদের সময় দিত। গত সোমবার ঢাকা যাওয়ার সময় কিছুতেই যেতে চায় নি দাবি করে মুর্শিদা জানায় অন্য হেলপার না যাওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে শাহিনুরকে ঢাকা যেতে হয়েছে। তাঁর ঢাকা যাওয়ার যে ইচ্ছে ছিল না সে কথাটিও তাঁকে জানিয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন বুধবার সকাল ৯টার দিকে শ্রমিক পুলিশ সংঘর্ষের সময় এসআই ট্রাভেলস্ এর হেলপার শাহিনুর রহমান আহত হন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ব্লকের আবাসিক সার্জন জেসমিন নাহার তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর বুকে ও পেটে অনেক ছররা গুলির জখম ছিল।

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages