তুলসী গঙ্গা নদীর উৎপত্তি বদলগাছী উপজেলার নগর কুসুম্বী নামক
স্থানে, আর শেষ গিয়ে মিলেছে রানী নগরের ত্রিমোহনীয় নামক স্থানে।
নদীটি এক দশক আগে পলি ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছিল। এতে প্রতিবছর প্রায় ৩০ টি গ্রাম বর্ষা মৌসুমে অকাল বন্যার শিকার হয়ে আসছিল। তা ছাড়া খরা মৌসুমে পানি স্তর নেমে গিয়ে দেখা দেয় মিঠা পানি সংকট। এ অবস্থায় গত বছর বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ সেচ প্রকল্পের আওতায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রায় সোয়া ২ কোটি টাকা ব্যয়ে তুলসী গঙ্গার ১৬ কিলোমিটার পুন:খনন কাজ সম্পন্ন করে।
নদী খনন শেষ হলে দু’ ধারে ২০ হাজার ফলদ বনজ এবং ওষুধি গাছ রোপণ করে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। চলতি বছর এ নদীর পানি ব্যবহার করে দু’ ধারে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আউশসহ রবি ফসল চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষক। এতে ৩০টি গ্রামের ২০ হাজার কৃষক এ সেচ সুবিধা নিয়ে ফসল উৎপাদন করছে বলে সূত্র জানায়।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নওগাঁ সদর এর সহকারী প্রকৌশলী মো: মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তুলসী গঙ্গা নদী পুনঃখনন করার ফলে কৃষি নির্ভর এ এলাকায় আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। কৃষকরা এখন নদীর পানি ব্যবহার করে উদ্বৃত্ব ফসল ফলাতে পারছে ।
এ ছাড়া নদীর দু’ ধারে রোপণ করা গাছগুলো দ্রুত বেড়ে ওঠায় পরিবেশ রক্ষায় ব্যপক ভূমিকা পালন করছে এ অঞ্চলে।
নওগাঁ সদর উপজলার বোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক এনামুল হক, মঙ্গলপুর গ্রামের রাশেদুল এবং কাদোয়া গ্রামের কৃষক খাদেমুল হক বলেন, তুলসীগঙ্গা নদী খননের পূর্বে ছিল এ অঞ্চলের জন্য অভিশাপ । সামান্য বৃষ্টিতে নদীর দু’ তীর উপচে আশপাশের গ্রামগুলো তলিয়ে যেত। এ বছর এ সমস্যা আর নেই ।
স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকে জানান, নদী থেকে এখন দেশীয় মাছ যেমন মিলছে তেমন হাঁস পালন করে অনেক পরিবারে এসেছে স্বচ্ছলতা।