মাহফুজ রহমান (সম্পাদক, সাপ্তাহিক তুলসিগঙ্গা):
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের
আন্তরিকতার অভাবে দেশের প্রায় ২০ হাজার নকলনবিসের চাকরি স্থায়ীকরণ নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও নকলনবিসদের মধ্যে রশি টানাটানি চলছে। পাশাপাশি এক বছর ধরে নকলনবিসরা
পারিশ্রমিকও পাচ্ছেন না। এ কারণে তারা গত ৪ ডিসেম্বর থেকে বকেয়া পারিশ্রমিক ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলনে নামছেন। আজ
বৃহস্পতিবারের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২৪ ডিসেম্বর নকলনবিস অ্যাসোসিয়েশনের বিভাগীয়
প্রতিনিধি সভার সিদ্ধান্তে পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এ তথ্য জানিয়েছেন নকলনবিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, সারা দেশের প্রায় ২০ হাজার নকলনবিস নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় তামাশার খেলায় মেতে উঠেছে। তিনি বলেন, গত নভেম্বর আইনমন্ত্রী নকলনবিসদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারপর এই সংগঠনের উপদেষ্টা জাতীয় সংসদের চীপ হুইপ আ স ম ফিরোজ আইনমন্ত্রীর কাছে নকলনবিসদের সমস্যার বিষয়ে আলোচনা আশানুরূপ আশ্বাস না পাওয়ায় নকলনবিসরা গত ৪ ডিসেম্বর থেকে আন্দোলন শুরু করেন।
জানা গেছে, ‘কাজ আছে মজুরি আছে ভিত্তিতে’ নকলনবিসরা ভলিয়মের এক পৃষ্ঠা লেখার মজুরি পান মাত্র ২৪ টাকা। এই দিয়ে মাসে ১০-১২ হাজার টাকা মজুরি পান। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই সামান্য পারিশ্রমিক এক বছরেও পাচ্ছেন না। এ কারণে তারা অতিকষ্টে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ভূমি রেজিস্ট্রেশন বিভাগের নকলনবিসরা জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করেন। তারা দীর্ঘ দিন থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম ও যত্নের সহিত তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু এত পরিশ্রম করার পরও তাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় না।
বাংলাদেশ সরকারের তৃতীয় স্থানে থাকা রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাদের অনেক দিন ধরে চরম অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে আসতে হচ্ছে। অথচ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ’৭৪ সালে ঘোষণা দিয়েছিলেন নকলনবিসদের চাকরি স্থায়ী করা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকার শেখ হাসিনা নকলনবিসদের (এক্সট্রা মোহরার) চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয়নি। তাই নকলনবিসদের দাবি ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার নকলনবিসদের চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেটসহ সারা দেশে কর্মসূচি চলছে। বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার (নকলনবিস) অ্যাসোসিয়েশন সিলেট বিভাগের উদ্যোগে সিলেটের তালতলাস্থ জেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস প্রাঙ্গণে কর্মবিরতি পালন অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে নিবন্ধন পরিদপ্তরের মহাপরিদর্শক খান মো. আবদুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সাবরেজিস্ট্রার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার দীপক কুমার সরকার বলেন, ঢাকা জেলায় ১৮টি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে কাজ হচ্ছে। কিন্তু ঢাকার বাহিরে অনেক স্থানে কাজ বন্ধ রয়েছে।